2.15.2012

বাংলাদেশ চাইলে সাহায্য করব ॥ মুরলিধরন

আমি শুধু আমাদের দেশ শ্রীলঙ্কা নয়, বরং পুরো উপমহাদেশেই ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। সুযোগ পেলে বাংলাদেশেও কাজ করতে আগ্রহী
মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) অন্য দলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী দল বিবেচনা করা হয় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স আর চট্টগ্রাম কিংসকে। তবে বিপিএল শুরুর পর বরিশাল বার্নার্স নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছে এবং খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস সবচেয়ে ব্যালান্সড দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। এ কারণেই বিপিএল মাঠে গড়ানোর আগে প্রতিটি দলের কোচ, অধিনায়ক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, টি২০ ক্রিকেট সম্পূর্ণই ভিন্ন প্রকৃতির এবং যে কোন মুহূর্তেই একটি ম্যাচের ফলাফল ঘুরিয়ে দিতে একজন ক্রিকেটারই যথেষ্ট। বিপিএল একসঙ্গে অনেক বিদেশী ক্রিকেট তারকাকে হাজির করেছে বাংলাদেশে। এ কারণে দেশের ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটার বিষয়েও আশাবাদী অনেকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোদের ভেতর রয়েছেন মুত্তিয়া মুরালিধরনের মতো অন্যতম তারকা। বিশ্ব ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ স্পিনার হিসেবে বিবেচনা করা হয় এ শ্রীলঙ্কানকে। এই কিংবদন্তি অফস্পিনার কিছুটা বিস্ময়াভিভ‚ত হয়েছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) প্রতিটি দলেই অনেক বেশি পরিমাণে বাঁহাতি অফস্পিনারকে খেলতে দেখে। তিনি জানিয়েছেন, শুধু স্পিনার নয় বোলিং লাইনআপে বৈচিত্র্যতাপূর্ণ ভাল বোলারদের সমš^য় ঘটাতে হবে। ইতোমধ্যে ভারতের অন্যতম অফস্পিনার অনিল কুম্বলের সঙ্গে ক্রিকেট উন্নয়নে স্কুল বালকদের নিয়ে কাজ করা মুরালি আগ্রহ পোষণ করেছন বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নের জন্য কাজ করার বিষয়ে।
মুরালিধরন টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেটধারী। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুল আনামের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে আগে থেকেই বিপিএল খেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। ৩৯ বছর বয়েসী মুরালি জানান, তিনি মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রিকেটবিষয়ক যাবতীয় তথ্যাদি সারাবিশ্বের তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে চান। অনিল কুম্বলের সঙ্গে ভারতের কয়েকটি স্কুলের ছাত্রদের সঙ্গে দুই মাস কাজও করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর বিপিএলের মতো আসর খেলতে পেরে উচ্ছ¡সিত মুরালিধরন। তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বিপিএলে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। অবসর নেয়ার পর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এটা অনেক বড় একটা সুযোগ। কারণ আমি ক্রিকেট খেলার চেয়ে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য কিছু করতে চাই যাতে তারা শিখতে পারে। আর বিপিএলের মতো আসরে যেসব ক্রিকেটার খেলছে তাঁরা যেন আমার কাছ থেকে লাভবান হতে পারে সে বিষয়ে আমি সবসময় সচেষ্ট। আমি শুধু আমাদের দেশে নয়, বরং পুরো উপমহাদেশেই ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশেও কাজ করতে আগ্রহী। আমি মাহবুব আনাম ও গ্রামীণফোনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আশা করছি অচীরেই আমরা কাজ শুরু করতে পারব।’ বিপিএলে বাঁহাতি অফস্পিনারের আধিক্য দেখে মুরালি বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট শুধু এতগুলো বাঁহাতি অফস্পিনার দিয়ে বেশি লাভবান হতে পারবে না। এমনকি বেশিদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও এটা অনেক বড় অন্তরায়। টি২০ ক্রিকেটের তুলনায় অন্য ফরমেটের ক্রিকেট সম্পূর্ণই ভিন্ন। ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ জিততে হলে বোলিং লাইনআপে বৈচিত্র্যতা থাকা অপরিহার্য।’ ২০১০ সালের জুলাইয়ে গলে ভারতের বিরুদ্ধে ৮০০তম উইকেট নেয়ার পরই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান এ বিশ্বসেরা স্পিনার।
ক্যান্ডিতে জন্ম নেয়া এ ক্রিকেটার অবশ্য শাকিব আল হাসানকে বাংলাদেশের অন্যতম একটি সম্পদ মনে করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সে অনেক ভাল করছে। ইতোমধ্যেই ওয়ানডে ও টেস্ট উভয় ফরমেটের ক্রিকেটে সে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তাঁর মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশের জন্য উপকারী হয়েছে।’ বর্তমান বিশ্বের যারা অফস্পিনার হিসেবে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করছেন তাঁদের নিউজিল্যান্ডের নাথান ম্যাককালাম, পাকিস্তানের সাঈদ আজমল ও শহীদ আফ্রিদি, বাংলাদেশের শাকিব এবং ভারতের হরভজন সিং ও রবিচন্দ্রন আশ্বিনের ভ‚য়সী প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর মতে, আজমল বর্তমানে বিশ্বের সেরা অফস্পিনার। আর আফ্রিদি ও শাকিব ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি¯ স্বরূপ।