মহানগর ঢাকা জেগে উঠলেও সকাল সোয়া ৯টার দিকে বিমানবন্দর সংলগ্ন র্যাডিসন হোটেলের সামনেটা একেবারেই নিষ্প্রাণ। তখনও বিসিবির বা বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল, গেম অন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের বড় কর্তারা কেউ আসেননি; কিন্তু যে রুমটা পেরিয়ে বলরুমে প্রবেশ করতে হয় সে রুমের এক কোনায় দেখা গেল রাজশাহীর থিঙ্ক ট্যাংক আতাহার আলী খান, ফারুক আহমেদ, মুশফিকুর রহিম, খালেদ মাসুদ পাইলটরা নিবিষ্ট মনে শলাপরামর্শে ব্যস্ত। ভেতরে গিয়ে দেখা গেল অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও একই কাজ করছে। তাদের এই ভাব দেখেই বোঝা গেল, পছন্দের খেলোয়াড় কিনতে কেউ কাউকে ছাড় দেবে না। দুপুর পৌনে ১২টা থেকে শুরু হওয়া নিলামেও দেখা গেল শক্তিশালী দল গড়তে সবাই মরিয়া। একে অন্যকে টেক্কা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টার দিকে শেষ হয় নিলাম।
তবে টানটান উত্তেজনা থাকলেও ছিল না কোনো বিশৃঙ্খলা। অকশন কমিশনার বিসিবির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব আনাম ২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের যুগান্তকারী দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, এ নিলামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট এক নতুন যুগে প্রবেশ করল। গতকালের নিলামে ১১১ বিদেশির মধ্যে ৪৬ জন এবং দেশি ৮৬ জনের মধ্যে ৬০ জন দল পেয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যাশা মতোই টানাটানি পড়েছিল পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদি এবং ক্রিস গেইলকে নিয়ে। ৭ লাখ ইউএস ডলারে বুমবুম আফ্রিদিকে কিনেছে ঢাকা গ্গ্নাডিয়েটরস। আর ৫ লাখ ৫১ হাজারে ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলকে দলে টেনেছে বরিশাল। দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। সিলেট এবং ঢাকার সঙ্গে লড়াই করে ২ লাখ ডলারে তাকে কিনে নিয়েছে খুলনা রয়্যাল বেঙ্গল। তবে নিলামে একটা বিষয় ছিল চোখে পড়ার মতো। অলরাউন্ডারদের দিকে নজর ছিল সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজির। আর বর্ষীয়ান এবং বাংলাদেশের কন্ডিশনে এ ফরম্যাটে কতটা ভালো করতে পারবেন সে দিকে সজাগ ছিল প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজির।
বিদেশি 'এ' ক্যাটাগরির আবদুল রাজ্জাকের ডাকের মাধ্যমে শুরু হয় নিলাম। অস্ট্রেলিয়ান অকশনিয়ার সাইরাস মাদান পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ভিত্তিমূল্য ১ লাখ ডলারে তাকে কিনে নেয় দুরন্ত রাজশাহী। শুরুর মিনিট পনেরোর মধ্যেই চলে আসে নিলামের সবচেয়ে উত্তেজনার মুহূর্তটি। প্রথমে ক্রিস গেইলকে নিয়ে লড়াইয়ে নামে তিন দল বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ক্যারিবীয় ক্রিকেটারকে পায় বরিশাল। আরেক ক্যারিবীয় দানব কিয়েরন পোলার্ডকে নিয়েও ভালোই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সিলেটকে টেক্কা দিয়ে ৩ লাখ ডলারে তাকে কিনে নেয় ঢাকা। আর উত্তেজনার পারদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে যায় আফ্রিদির বেলায়। সব ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাকে কেনার জন্য লড়াইয়ে নামে। টাইব্রেকারে তাকেও দলে টানে ঢাকা গ্গ্নাডিয়েটরস।
দেশি ক্রিকেটারদের 'এ' ক্যাটাগরির নিলাম শুরু করেন চট্টগ্রামের রাশা নিজাম। এ পর্বে উত্তেজনা ছড়ান নাসির হোসেন এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর শুরু হয় বিদেশি 'বি' ক্যাটাগরির নিলাম। রাজশাহীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই ক্যাটাগরির সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ১০ হাজার ডলারে শ্রীলংকান বর্ষীয়ান অলরাউন্ডার সনাথ জয়সুরিয়াকে কিনে নেয় খুলনা। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হওয়া এ নিলামে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয় এই ক্যাটাগরিতে। জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার এলটন চিগুম্বুরার নাম সাইরাস মাদান ডাকামাত্র রাজশাহীর টেবিল থেকে কেউ একজন হাত তোলেন। অন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি তার ব্যাপারে আগ্রহ না দেখালে মাদান রাজশাহীর হাতে তুলে দেন তাকে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহীর টিম ম্যানেজার ফারুক আহমেদ জানান, তারা চিগুম্বুরার জন্য বিড করেননি। তখন নিলাম কমিশনার মাহবুব আনাম জানান, কোনো টেবিল থেকে যে কেউ হাত তুললেই তা বিড বলে গণ্য হবে। প্রথমবার বলে রাজশাহীর কথা মেনে নেওয়া হলো। বিড করার জন্য প্রতিটি টেবিলে ব্যাটন দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে যেন ওটা ব্যবহার করেন। অন্যথায় বিড বলে গণ্য করা হবে। এরপর আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ভুল করেনি। মধ্যাহ্ন বিরতির পর আরো ঘণ্টাখানেক চলে নিলাম। দেশি-বিদেশি তিনটি ক্যাটাগরিতে নিলাম হওয়ার পর অবিক্রীত থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে যাদের প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজির আগ্রহ আছে তাদের আবার নিলামে তোলা হয়। প্রথমে অবিক্রীতদের মধ্যে 'এ' ক্যাটাগরির হার্শেল গিবসকে ভিত্তিমূল্যে কিনে নেয় খুলনা। 'বি' ক্যাটাগরির বিদেশিদের মধ্যে ডোয়াইন স্মিথকে খুলনা, জেরেমি টেলরকে চট্টগ্রাম, ফাওয়াদ আলম, শন অরভিনকে রাজশাহী এবং গ্যারি কেডিকে নেয় সিলেট। দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আসিফ আহমেদ রাতুলকে রাজশাহী এবং কামরুল ইসলাম রাবি্বকে নেয় বরিশাল।
তবে এত ক্রিকেটারের মাঝেও আট বিদেশি কোটার দু'জন এখনও বাকি বরিশালের। তবে অকশন কমিশনার জানিয়েছেন, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমতিক্রমে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবিক্রীত থাকাদের মধ্য থেকে ভিত্তিমূল্যে দু'জনকে নিতে পারবে তারা।
:::::খবরঃ সমকাল:::::
তবে টানটান উত্তেজনা থাকলেও ছিল না কোনো বিশৃঙ্খলা। অকশন কমিশনার বিসিবির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুব আনাম ২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের যুগান্তকারী দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, এ নিলামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট এক নতুন যুগে প্রবেশ করল। গতকালের নিলামে ১১১ বিদেশির মধ্যে ৪৬ জন এবং দেশি ৮৬ জনের মধ্যে ৬০ জন দল পেয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যাশা মতোই টানাটানি পড়েছিল পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদি এবং ক্রিস গেইলকে নিয়ে। ৭ লাখ ইউএস ডলারে বুমবুম আফ্রিদিকে কিনেছে ঢাকা গ্গ্নাডিয়েটরস। আর ৫ লাখ ৫১ হাজারে ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলকে দলে টেনেছে বরিশাল। দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। সিলেট এবং ঢাকার সঙ্গে লড়াই করে ২ লাখ ডলারে তাকে কিনে নিয়েছে খুলনা রয়্যাল বেঙ্গল। তবে নিলামে একটা বিষয় ছিল চোখে পড়ার মতো। অলরাউন্ডারদের দিকে নজর ছিল সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজির। আর বর্ষীয়ান এবং বাংলাদেশের কন্ডিশনে এ ফরম্যাটে কতটা ভালো করতে পারবেন সে দিকে সজাগ ছিল প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজির।
বিদেশি 'এ' ক্যাটাগরির আবদুল রাজ্জাকের ডাকের মাধ্যমে শুরু হয় নিলাম। অস্ট্রেলিয়ান অকশনিয়ার সাইরাস মাদান পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ভিত্তিমূল্য ১ লাখ ডলারে তাকে কিনে নেয় দুরন্ত রাজশাহী। শুরুর মিনিট পনেরোর মধ্যেই চলে আসে নিলামের সবচেয়ে উত্তেজনার মুহূর্তটি। প্রথমে ক্রিস গেইলকে নিয়ে লড়াইয়ে নামে তিন দল বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ক্যারিবীয় ক্রিকেটারকে পায় বরিশাল। আরেক ক্যারিবীয় দানব কিয়েরন পোলার্ডকে নিয়েও ভালোই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সিলেটকে টেক্কা দিয়ে ৩ লাখ ডলারে তাকে কিনে নেয় ঢাকা। আর উত্তেজনার পারদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে যায় আফ্রিদির বেলায়। সব ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাকে কেনার জন্য লড়াইয়ে নামে। টাইব্রেকারে তাকেও দলে টানে ঢাকা গ্গ্নাডিয়েটরস।
দেশি ক্রিকেটারদের 'এ' ক্যাটাগরির নিলাম শুরু করেন চট্টগ্রামের রাশা নিজাম। এ পর্বে উত্তেজনা ছড়ান নাসির হোসেন এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর শুরু হয় বিদেশি 'বি' ক্যাটাগরির নিলাম। রাজশাহীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই ক্যাটাগরির সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ১০ হাজার ডলারে শ্রীলংকান বর্ষীয়ান অলরাউন্ডার সনাথ জয়সুরিয়াকে কিনে নেয় খুলনা। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হওয়া এ নিলামে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয় এই ক্যাটাগরিতে। জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার এলটন চিগুম্বুরার নাম সাইরাস মাদান ডাকামাত্র রাজশাহীর টেবিল থেকে কেউ একজন হাত তোলেন। অন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি তার ব্যাপারে আগ্রহ না দেখালে মাদান রাজশাহীর হাতে তুলে দেন তাকে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহীর টিম ম্যানেজার ফারুক আহমেদ জানান, তারা চিগুম্বুরার জন্য বিড করেননি। তখন নিলাম কমিশনার মাহবুব আনাম জানান, কোনো টেবিল থেকে যে কেউ হাত তুললেই তা বিড বলে গণ্য হবে। প্রথমবার বলে রাজশাহীর কথা মেনে নেওয়া হলো। বিড করার জন্য প্রতিটি টেবিলে ব্যাটন দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে যেন ওটা ব্যবহার করেন। অন্যথায় বিড বলে গণ্য করা হবে। এরপর আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ভুল করেনি। মধ্যাহ্ন বিরতির পর আরো ঘণ্টাখানেক চলে নিলাম। দেশি-বিদেশি তিনটি ক্যাটাগরিতে নিলাম হওয়ার পর অবিক্রীত থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে যাদের প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজির আগ্রহ আছে তাদের আবার নিলামে তোলা হয়। প্রথমে অবিক্রীতদের মধ্যে 'এ' ক্যাটাগরির হার্শেল গিবসকে ভিত্তিমূল্যে কিনে নেয় খুলনা। 'বি' ক্যাটাগরির বিদেশিদের মধ্যে ডোয়াইন স্মিথকে খুলনা, জেরেমি টেলরকে চট্টগ্রাম, ফাওয়াদ আলম, শন অরভিনকে রাজশাহী এবং গ্যারি কেডিকে নেয় সিলেট। দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আসিফ আহমেদ রাতুলকে রাজশাহী এবং কামরুল ইসলাম রাবি্বকে নেয় বরিশাল।
তবে এত ক্রিকেটারের মাঝেও আট বিদেশি কোটার দু'জন এখনও বাকি বরিশালের। তবে অকশন কমিশনার জানিয়েছেন, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমতিক্রমে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবিক্রীত থাকাদের মধ্য থেকে ভিত্তিমূল্যে দু'জনকে নিতে পারবে তারা।
:::::খবরঃ সমকাল:::::